একুরের এক ব্যাঙের সঙ্গে মাঠের এক ইঁদুরের খুব ভাব ছিল। তারা একসঙ্গে গল্প করতে করতে খাবার খুঁজে বেড়াতো। দু -জন যেন এক প্রাণ আর এক আত্মা। দুই বন্ধুর মধ্যে ইঁদুর ছিল সহজ সরল প্রকৃতির। আর ব্যাঙ ছিল একটু অন্য রকমের। সে মাঝে মাঝে ইঁদুরকে জব্দ করে বেশ মজা করত। একদিন দুই বন্ধুতে একটি মাঠে খাবার খুঁজে বেড়াছিল।মাঝে মাঝে তারা খাবার খুঁজতে খুঁজতে দু -জন দুদিক চলে যাচ্ছিল। ব্যাঙ বলল -বন্ধু, আমরা মাঝে মাঝেই দুজন দুদিকে সরে যাচ্ছি। সেই জন্য আমাদের গল্প ঠিক জমছেনা। আমরা বরং এক কাজ করি। আমরা একটা পায়ের সঙ্গে তোমার একটা পা বাঁধে দিই। তাহলে আমরা আর ছাড়াছাড়ি হব না। বিপদ এলেও এক সাথে পালাতে পারব।
ইঁদুর অতশত ভাবল না। সে ব্যাঙের কথায় রাজী হয়ে গেল।ব্যাঙের পায়ের সঙ্গে নিজের পা বেঁধে নিয়ে আবার চলতে লাগল। কিছুদূর যাবার পর তারা একটি পুকুরের কাছে এসে পৌঁছল। পুকুরে জল দেখে ব্যাঙের ভারী আনন্দ হল। সে আনন্দে গ্যাঙর গ্যাং করে ডেকে বলল -ইঁদুর ভাই। চল একটু পুকুরে সাঁতার কেটে নিই। এই বলে ব্যাঙ ঝপাং করে লাফিয়ে পরল পুকুরের জলে। ইঁদুর বেচারা কি আর করে।পা -বাঁধা অবস্থায় সেও ব্যাঙের সঙ্গে জলে পড়ে হাবুডুবু খেতে লাগল।
ব্যাঙ মনের আনন্দে সাঁতার কাটছিল। আর ইদুরের করুন অবস্থা দেখে মজা পাচ্ছিল। এদিকে ইঁদুর জল খেয়ে দম আটকে মারা গেল। ব্যাঙ তা লক্ষ্য করল না। ইঁদুরের মরাদেহ কিছুক্ষন জলে ডুবে থেকে আবার ভেসে উঠল। তারপর ব্যাঙের পাশে পাশে ঘুরতে লাগল। সেই সময় আকাশে একটি চিল উড়ছিল। সে মরা ইঁদুরটিকে জলে ভাসতে দেখে, ছোঁ মেরে সেটাকে তুলে নিয়ে গেল। ইঁদুরের সঙ্গে ব্যাঙ -ও পা -বাঁধা অবস্থায় শুন্যে ঝুলতে লাগল। চিলটি একটি গাছে বসে মনের সুখে প্রথমে ইঁদুরটিকে খেল। পরে জ্যান্ত ব্যাঙটিকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেল। তারপর আবার উড়ে গেল আকাশে।
নীতিকথা :- ন্যায় বিচারে সব অপরাধীরই শাস্তি হয়।
Comments
Post a Comment