Skip to main content

জলপাই গাছ তার নলখাগড়া (ছোটোদেরগল্প )

 এক সকালে জোর জোর হওয়া বইছিলো। হওয়া দাপটে নলখাগড়ার বন এদিক ওদিক, হেলে-দুলে শুয়ে পড়ছে দেখে, পাশে এক জলপাই গাছের মনে খুব অহংকার হল। সে মজা করে নলখাগড়াদের ডেকে বলল, ওহে! তোমাদের এই দুরাবস্থা দেখে আমার বড্ড মায়া হচ্ছে। বরই দুর্বল তোমাদের শরীর। একটু জোরে হওয়া বইলেই তোমাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। সবাই মাথা নুইয়ে কেমন মাটিতে লুটিয়ে পড়ো। এখন আমাকে দেখো তো!কেমন মাথা উঁচু করে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। ওই হওয়া আমার কোনোদিন কিছুই করতে পারবেনা। নলখাগড়ারা চুপ করে, জলপাই গাছের   সমস্ত কথাই শুনল। কেউ কোনো জবাব দিল না


নলখাগড়ারদের চুপ করে থাকতে দেখে, জলপাই গাছের অহংকার আরো দ্বিগুন বেরে গেল। সে তখন বড়াই করে নিজের কথা আরো বেশি করে বলতে লাগল। সে নাকি কোনোদিন হওয়া বাতাসকে গ্রাহ্য করে না। যতই ঝড়ঝাপটা আসুক না কেন ;সে চিরদিন মাথা উঁচু করে শক্ত হয়েই দাঁড়িয়ে থাকবে। জলপাই গাছের এই সব কথা শুনেও নলখাগড়ারা কেউ কিছু বলতে সাহস করল না। চুপ করে সব কথা শুনল।

খানিক বাদে হটাৎ কালো মেঘে আকাশ ছেয়ে গেল। সেই সঙ্গে শুরু হলো ঝোড়ো হওয়া। প্রথমে হওয়ার বেগ আস্তে হলেও, ক্রমশ তা বাড়তে লাগল। এক সময় সো -সো শব্দ করে ঝড় উঠল। হওয়ার দাপটে নলখাগড়ারা আর সোজা হয়ে থাকে পারল না তারা সবাই মাটিতে নুইয়ে পরল। জলপাই গাছ কিন্তু দিব্যি তখন মাথা উঁচু করেই দাঁড়িয়ে রইলো। তারা রাশি রাশি পাতাগুলো তখন হওয়ার দাপট সামলাচ্ছে। আরও একটু পরে ঝড় আরও প্রবল হল। গাছের ডালপালা দুমড়ে মুচড়ে ভাঙতে লাগল জলপাই গাছের অহংকারও একটু একটু করে চূর্ণ হতে থাকল। এক সময় জলপাই গাছ মোড় - মোড় করে শেকড় -সমেত উপড়িয়ে সজোরে মাতিতে আছড়ে পরল।

নীতিকথা :- বলবানের কাছে নত হলে মান যায় না।

Comments

Popular posts from this blog

ছোটদের গল্প (এক কৃপণের ধন )

 এক মহা কৃপণ লোক ছিল। একদিন সে তার সমস্ত বিষয় সম্পত্তি বিক্রি করে, শহর থেকে বেশ বড় একটা সোনার দলা কিনে নিয়ে এল। তারপর সেটি ঘরে না রেখে, লুকিয়ে তার বাগানের এক কোণে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখল। এরপর থেকে রোজ সকাল হলেই, সেই কৃপণ তার বাগানে গিয়ে, চুপি চুপি গর্তের মাটি সরিয়ে সোনার দোলাটি দেখে, আবার মাটি চাপা দিয়ে আসত। সোনার দোলাটি ঘরে না রেখে মাটিতে পুঁতে কৃপণ মনে মনে খুব নিশ্চিন্ত হয়েছিল। এই ভাবে তার কেটে গেল অনেক দিন। হটাৎ একদিন সেই কৃপণের বাড়ির ধূত চাকর দেখে ফেলল সেই কান্ড। রোজ সকালে মনিবকে বাগানের মাটি খুঁড়তে দেখে তার ভীষণ কৌতূহল হল। গর্তের ভেতর কি আছে, তা দেখার জন্য সে সুযোগ খুঁজতে লাগল। একদিন কৃপণ কিছু কেনাকাটি করতে শহরে গেল। বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হল। সেই ফাঁকে চাকরটি বাগানে গিয়ে গর্তের মাটি সরিয়ে দেখতে পেল সোনার দলাটি। এতো বড়ো একটি সোনার দলা হাতে পেয়ে চাকরটির ভীষণ লোভ হল। মনিব ফেরার আগেই সে চুপি চুপি সোনার দলাটি নিয়ে পালিয়ে গেল। রোজকার মতো, পরেরদিন সকলে কৃপণ গর্তের কাছে গিয়ে দেখল, গর্ত খালি। সেখানে সোনার দলাটি নেই। কৃপণ বুক চাপড়ে কাঁদতে লাগল। তার কান্না শুনে প্রতিবেশিরা সবাই ছু

জনগণ মন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

 জনগণ মন অধিকনাক ও জন হে।  ভারত ভাগ্য বিধাতা।।  পাঞ্জাব ব সিন্ধ গুজরাত মারাঠা।  দাবির ও উৎচলো গঙ্গা।  তব শুভ  অসিস  মাঘে ।। গা হে তব জয় গাথা।  জনগণ মঙ্গল ও গায়ক ও  জয় হে ।। ভারত ভাগ্য বিধাতা জয় হে জয় হে জয় হে । জয় জয় জয় জয় জয় হে। ।