এক বনে এক সিংহ বাস করত। সে যথেচজভাবে পশু মারতো। যত না খেতো, তার চেয়ে বেশি মেরে ফেলতো। একদিন বনের সব প্রাণীরা সভা করে ঠিক করল, প্রতিদিন সিংহের খাবারের জন্য একটা করে পশু তার কাছে পাঠাবে। এর ফলে খাবারের খোঁজে সিংহেরও কষ্ট হবে না। আর বেশি পশুও মারা পড়বে না।
এক বৃদ্ধ শেয়াল সিংহকে গিয়ে এই প্রস্তাব দিল। সিংহ এই প্রস্তাবে রাজী হল। প্রস্তাবটা মন্দ নয়। তাকে আর প্ররিশ্রম করে খাবার জোগাড় করতে হবে না। বিনা পরিশ্রমে খাবার পাওয়া যাবে।
প্রতিদিন একটা করে পশু পালা করে ঠিক সময় মত সিংহের গুহায় এসে হাজির হয়।সিংহ তাকে মেরে খেয়ে আরামে দিন কাটায়। একদিন এক বৃদ্ধ খরগোসের পালা এল। সে কী আর করে? যেতে তো তাকেই হবে। নিয়ম তো তারাই করেছে।
খরগোস খুব ধীর গতিতে এগোতে লাগল। সময় উত্তীর্ণ হয়ে যায়। এদিকে সিংহ তো খিদের জ্বালায় অস্থির। সে খরগোস কে দেখা মার্ত্র গর্জন করে ওঠে। " তোর এত সাহস ', তুই এত দেরি করে এলি। "
খরগোসের তখন ফন্দি আটা হয়ে গেছে। মৃত্যুর মুখে একেবার শেষ চেষ্টা করে দেখা যাক, বাঁচা যায় কিনা। খরগোসটি ভয়ের ভান করে কাঁদতে কাঁদতে বলল, " মহারাজ অধমের অপরাধ নেবেন না। পথে আপনার মত আর একটা সিংহ আমাকে খেতে চেয়েছিল। আমি অনেক কাকুতি মিনতি করে এই খবর টা আপনাকে দেবার জন্য এসেছি। "
এ কথা শুনে সিংহ তো রেগে আগুন। সে বলল, " চল দেখি, কার এত সাহস হল আমার খাবার আটকায় "।
খরগোস তখন সিংহকে নিয়ে একটা কুয়োর কাছে এসে বলল,"মহারাজ, বেটা আপনাকে দেখে লুকিয়েছে। নীচের দিকে তাকিয়ে দেখুন।"
সিংহ নীচের দিকে তাকিয়ে নিমল জলে তার নিজের ছায়া জলের মধ্যে দেখতে পেল। সে ভাবল এটা বুঝি অন্য আর একটা সিংহ। খরগোসের কথা বিশ্বাস করে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে সে কুয়োর মধ্যে ঝাঁপিয়ে পরল। সিংহ আর উঠতে পারল না। জলের মধ্যে ছটফট করতে করতে সেখানে শেষ হয়ে গেল। খরগোস তার বুদ্ধির জোরে বেচেঁ গেল। বাঁচিয়ে দিল অন্য পশুদেরও।
নীতিকথা :- শারীরিক শক্তির চেয়ে বুদ্ধির শক্তি অনেক বেশি।
Comments
Post a Comment