Skip to main content

বুদ্ধির জয় ( ছোটোদের গল্প )

 এক বনে এক সিংহ বাস করত। সে যথেচজভাবে পশু মারতো। যত না খেতো, তার চেয়ে বেশি মেরে ফেলতো। একদিন বনের সব প্রাণীরা সভা করে ঠিক করল, প্রতিদিন সিংহের খাবারের জন্য একটা করে পশু তার কাছে পাঠাবে। এর ফলে খাবারের খোঁজে সিংহেরও কষ্ট হবে না। আর বেশি পশুও মারা পড়বে না।

এক বৃদ্ধ শেয়াল সিংহকে গিয়ে এই প্রস্তাব দিল। সিংহ এই প্রস্তাবে রাজী হল। প্রস্তাবটা মন্দ নয়। তাকে আর প্ররিশ্রম করে খাবার জোগাড় করতে হবে না। বিনা পরিশ্রমে খাবার পাওয়া যাবে।

প্রতিদিন একটা করে পশু পালা করে ঠিক সময় মত সিংহের গুহায় এসে হাজির হয়।সিংহ তাকে মেরে খেয়ে আরামে দিন কাটায়। একদিন এক বৃদ্ধ খরগোসের পালা এল। সে কী আর করে? যেতে তো তাকেই হবে। নিয়ম তো তারাই করেছে।

খরগোস খুব ধীর গতিতে এগোতে লাগল। সময় উত্তীর্ণ হয়ে যায়। এদিকে সিংহ তো খিদের জ্বালায় অস্থির। সে খরগোস কে দেখা মার্ত্র গর্জন করে ওঠে। " তোর এত সাহস ', তুই এত দেরি করে এলি। "

খরগোসের তখন ফন্দি আটা হয়ে গেছে। মৃত্যুর মুখে একেবার শেষ চেষ্টা করে দেখা যাক, বাঁচা যায় কিনা। খরগোসটি ভয়ের ভান করে কাঁদতে কাঁদতে বলল, " মহারাজ অধমের অপরাধ নেবেন না। পথে আপনার মত আর একটা সিংহ আমাকে খেতে চেয়েছিল। আমি অনেক কাকুতি মিনতি করে এই খবর টা আপনাকে দেবার জন্য এসেছি। "

এ কথা শুনে সিংহ তো রেগে আগুন। সে বলল, " চল দেখি, কার এত সাহস হল আমার খাবার আটকায় "।

খরগোস তখন সিংহকে নিয়ে একটা কুয়োর কাছে এসে বলল,"মহারাজ, বেটা আপনাকে দেখে লুকিয়েছে। নীচের দিকে তাকিয়ে দেখুন।"

সিংহ নীচের দিকে তাকিয়ে নিমল জলে তার নিজের ছায়া জলের মধ্যে দেখতে পেল। সে ভাবল এটা বুঝি অন্য আর একটা সিংহ। খরগোসের কথা বিশ্বাস করে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে সে কুয়োর মধ্যে ঝাঁপিয়ে পরল। সিংহ আর উঠতে পারল না। জলের মধ্যে ছটফট করতে করতে সেখানে শেষ হয়ে গেল। খরগোস তার বুদ্ধির জোরে বেচেঁ গেল। বাঁচিয়ে দিল অন্য পশুদেরও।


নীতিকথা :-  শারীরিক শক্তির চেয়ে বুদ্ধির শক্তি অনেক বেশি।

Comments

Popular posts from this blog

ছোটদের গল্প (এক কৃপণের ধন )

 এক মহা কৃপণ লোক ছিল। একদিন সে তার সমস্ত বিষয় সম্পত্তি বিক্রি করে, শহর থেকে বেশ বড় একটা সোনার দলা কিনে নিয়ে এল। তারপর সেটি ঘরে না রেখে, লুকিয়ে তার বাগানের এক কোণে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখল। এরপর থেকে রোজ সকাল হলেই, সেই কৃপণ তার বাগানে গিয়ে, চুপি চুপি গর্তের মাটি সরিয়ে সোনার দোলাটি দেখে, আবার মাটি চাপা দিয়ে আসত। সোনার দোলাটি ঘরে না রেখে মাটিতে পুঁতে কৃপণ মনে মনে খুব নিশ্চিন্ত হয়েছিল। এই ভাবে তার কেটে গেল অনেক দিন। হটাৎ একদিন সেই কৃপণের বাড়ির ধূত চাকর দেখে ফেলল সেই কান্ড। রোজ সকালে মনিবকে বাগানের মাটি খুঁড়তে দেখে তার ভীষণ কৌতূহল হল। গর্তের ভেতর কি আছে, তা দেখার জন্য সে সুযোগ খুঁজতে লাগল। একদিন কৃপণ কিছু কেনাকাটি করতে শহরে গেল। বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হল। সেই ফাঁকে চাকরটি বাগানে গিয়ে গর্তের মাটি সরিয়ে দেখতে পেল সোনার দলাটি। এতো বড়ো একটি সোনার দলা হাতে পেয়ে চাকরটির ভীষণ লোভ হল। মনিব ফেরার আগেই সে চুপি চুপি সোনার দলাটি নিয়ে পালিয়ে গেল। রোজকার মতো, পরেরদিন সকলে কৃপণ গর্তের কাছে গিয়ে দেখল, গর্ত খালি। সেখানে সোনার দলাটি নেই। কৃপণ বুক চাপড়ে কাঁদতে লাগল। তার কান্না শুনে প্রতিবেশিরা সবাই ছু

জনগণ মন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

 জনগণ মন অধিকনাক ও জন হে।  ভারত ভাগ্য বিধাতা।।  পাঞ্জাব ব সিন্ধ গুজরাত মারাঠা।  দাবির ও উৎচলো গঙ্গা।  তব শুভ  অসিস  মাঘে ।। গা হে তব জয় গাথা।  জনগণ মঙ্গল ও গায়ক ও  জয় হে ।। ভারত ভাগ্য বিধাতা জয় হে জয় হে জয় হে । জয় জয় জয় জয় জয় হে। ।