একদিন এক নেকড়ে জঙ্গলের পিছন দিকে ঝর্নার জল খেতে গেল। এমন সময় তার নজরে পরল -একটু দূরে নীচের দিকে এক ভেড়ার ছানা জল খাচ্ছে। ভেড়ার ছানাকে দেখে নেকড়ের ভীষণ লোভী হল। এমন হৃস্টপুষ্ট ভেড়ার ছানা এর আগে সে কখনো দেখেনি। লোভে নেকড়ের জিভ দিয়ে জল গড়াতে লাগল। কিন্ত তাকে খাবে কি করে? বিনা দোষে তো আর কাউকে মারা যায় না।
নেকড়ে অনেক চিন্তা ভাবনা করে একটা মতলব বের করল। তারপর পায়ে পায়ে ভেড়ার ছানটির কাছে এগিয়ে গিয়ে তাকে ডেকে বলল, ওরে হতভাগা পুচকে ভেড়া!তোর দেখছি আক্কেল বলে কিছুই নেই। দেখছিস আমি উপরে জল খাচ্ছি। তুই কোন সাহসে আমার জল ঘোলা করছিস?
নেকড়ের কথা শুনে ভেড়ার ছানা ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বলল, আজ্ঞে নেকড়ে মশাই!আমি তো নীচে জল খাচ্ছি। আর আপনি তো উপরে জল খাচ্ছেন। জল তো উপরের দিকে থেকে নীচে আসছে। তাহলে আমার জল খাওয়ার জন্য উপরের জল কি করে ঘোলা হবে বলুন? নেকড়ে একটু চিন্তা করে দেখল, কথাটা তো সত্যি। সে তো ঠিক কোথাই বলেছে। বাচ্চা হলেও বেশ বুদ্ধি আছে দেখছি। নেকড়ে আবার একটু ভাবে বলল -জল না হয় নাই ঘোলা করেছিস, কিন্তু গেল বছর সেই যে তুই আমায় গালি দিয়েছিলি। মনে আছে তোর? এক বছর আগে তো আমার জন্মই হয়নি। তাহলে কি করে আমি এক বছর আগে আপনাকে গালি দিলাম বলুন?
নেকড়ে এবার ভীষণ রেগে গেল। এমনিতে খিদেয় তার পেট চোঁ -চোঁ করছে।তার উপর ভেড়ার ছানা কিনা তার সব কথার খুঁত ধরছে। সে দাঁত কিড় মিড় করে বলল -বেশ তো, তুই না হয় গালি দিসনি। কিন্তু এবার আমার মনে পড়েছে, গালি তোর বাবা দিয়েছিল। তুইও যা, তোর বাবাও তা -সব একই কথা। এবার আর তোর কোন কথাই শুনব না। শোধ আমি তুলবই। এই বলে নেকড়ে লাফিয়ে পড়ে ভেড়ার ছানাটির ঘাড় কামড়ে ধরল।
নীতিকথা :- দুষ্ট লোকের ছলনার অভাব হয় না।
Comments
Post a Comment