Skip to main content

লোভী নেকড়ে (ছোটদের গল্প )

 একদিন এক নেকড়ে জঙ্গলের পিছন দিকে ঝর্নার জল খেতে গেল। এমন সময় তার নজরে পরল -একটু দূরে নীচের দিকে এক ভেড়ার ছানা জল খাচ্ছে। ভেড়ার ছানাকে দেখে নেকড়ের ভীষণ লোভী হল। এমন হৃস্টপুষ্ট ভেড়ার ছানা এর আগে সে কখনো দেখেনি। লোভে নেকড়ের জিভ দিয়ে জল গড়াতে লাগল। কিন্ত তাকে খাবে কি করে? বিনা দোষে তো আর কাউকে মারা যায় না।


নেকড়ে অনেক চিন্তা ভাবনা করে একটা মতলব বের করল। তারপর পায়ে পায়ে ভেড়ার ছানটির কাছে এগিয়ে গিয়ে তাকে ডেকে বলল, ওরে হতভাগা পুচকে ভেড়া!তোর দেখছি আক্কেল বলে কিছুই নেই। দেখছিস আমি উপরে জল খাচ্ছি। তুই কোন সাহসে আমার জল ঘোলা করছিস?

নেকড়ের কথা শুনে ভেড়ার ছানা ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বলল, আজ্ঞে নেকড়ে মশাই!আমি তো নীচে জল খাচ্ছি। আর আপনি তো উপরে জল খাচ্ছেন। জল তো উপরের দিকে থেকে নীচে আসছে। তাহলে আমার জল খাওয়ার জন্য উপরের জল কি করে ঘোলা হবে বলুন? নেকড়ে একটু চিন্তা করে দেখল, কথাটা তো সত্যি। সে তো ঠিক কোথাই বলেছে। বাচ্চা হলেও বেশ বুদ্ধি আছে দেখছি। নেকড়ে আবার একটু ভাবে বলল -জল না হয় নাই ঘোলা করেছিস, কিন্তু গেল বছর সেই যে তুই আমায় গালি দিয়েছিলি। মনে আছে তোর? এক বছর আগে তো আমার জন্মই হয়নি। তাহলে কি করে আমি এক বছর আগে আপনাকে গালি দিলাম বলুন?

নেকড়ে এবার ভীষণ রেগে গেল। এমনিতে খিদেয় তার পেট চোঁ -চোঁ করছে।তার উপর ভেড়ার ছানা কিনা তার সব কথার খুঁত ধরছে। সে দাঁত কিড় মিড় করে বলল -বেশ তো, তুই না হয় গালি দিসনি। কিন্তু এবার আমার মনে পড়েছে, গালি তোর বাবা দিয়েছিল। তুইও যা, তোর বাবাও তা -সব একই কথা। এবার আর তোর কোন কথাই শুনব না। শোধ আমি তুলবই। এই বলে নেকড়ে লাফিয়ে পড়ে ভেড়ার ছানাটির ঘাড় কামড়ে ধরল।


নীতিকথা :- দুষ্ট লোকের ছলনার অভাব হয় না।

Comments

Popular posts from this blog

ছোটদের গল্প (এক কৃপণের ধন )

 এক মহা কৃপণ লোক ছিল। একদিন সে তার সমস্ত বিষয় সম্পত্তি বিক্রি করে, শহর থেকে বেশ বড় একটা সোনার দলা কিনে নিয়ে এল। তারপর সেটি ঘরে না রেখে, লুকিয়ে তার বাগানের এক কোণে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখল। এরপর থেকে রোজ সকাল হলেই, সেই কৃপণ তার বাগানে গিয়ে, চুপি চুপি গর্তের মাটি সরিয়ে সোনার দোলাটি দেখে, আবার মাটি চাপা দিয়ে আসত। সোনার দোলাটি ঘরে না রেখে মাটিতে পুঁতে কৃপণ মনে মনে খুব নিশ্চিন্ত হয়েছিল। এই ভাবে তার কেটে গেল অনেক দিন। হটাৎ একদিন সেই কৃপণের বাড়ির ধূত চাকর দেখে ফেলল সেই কান্ড। রোজ সকালে মনিবকে বাগানের মাটি খুঁড়তে দেখে তার ভীষণ কৌতূহল হল। গর্তের ভেতর কি আছে, তা দেখার জন্য সে সুযোগ খুঁজতে লাগল। একদিন কৃপণ কিছু কেনাকাটি করতে শহরে গেল। বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হল। সেই ফাঁকে চাকরটি বাগানে গিয়ে গর্তের মাটি সরিয়ে দেখতে পেল সোনার দলাটি। এতো বড়ো একটি সোনার দলা হাতে পেয়ে চাকরটির ভীষণ লোভ হল। মনিব ফেরার আগেই সে চুপি চুপি সোনার দলাটি নিয়ে পালিয়ে গেল। রোজকার মতো, পরেরদিন সকলে কৃপণ গর্তের কাছে গিয়ে দেখল, গর্ত খালি। সেখানে সোনার দলাটি নেই। কৃপণ বুক চাপড়ে কাঁদতে লাগল। তার কান্না শুনে প্রতিবেশিরা সবাই ছু

জনগণ মন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

 জনগণ মন অধিকনাক ও জন হে।  ভারত ভাগ্য বিধাতা।।  পাঞ্জাব ব সিন্ধ গুজরাত মারাঠা।  দাবির ও উৎচলো গঙ্গা।  তব শুভ  অসিস  মাঘে ।। গা হে তব জয় গাথা।  জনগণ মঙ্গল ও গায়ক ও  জয় হে ।। ভারত ভাগ্য বিধাতা জয় হে জয় হে জয় হে । জয় জয় জয় জয় জয় হে। ।