Skip to main content

বক ও সারস ( ছোটোদের গল্প )

 


এক দল বক রোজ এক কৃষকের ক্ষেতে এসে ধান খেয়ে যেত। কৃষক বক তাড়াবার জন্য অনেক রকম চেষ্টা করল। কিন্তু কিছুতেই তাদের সঙ্গে পেরে উঠল না। দিন দিন বকেদের বারবারন্ত বেড়ে চলল। তারা সবাই দল বেঁধে ঝাঁকে ঝাঁকে কৃষকের জমিতে নেমে, ফসল খেয়ে, তার সর্বনাশ করতে লাগল। কৃষক বকেদের তাড়াতে মাঝে মাঝে দমাদম্ম কেনেস্তারা পেটাত। কিন্তু আজ কাল আর তাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। ঢিল ছুড়লে, একটু সরে বসে আবার খেতে শুরু করত।

বকেদের দিন দিন শাসন সাহস বেড়ে যাওয়ায় কৃষক খুব দুশ্চিন্তায় পরল। কৃষকের দুরবস্থা দেখে একদিন তার বন্ধু বলল, ভেবে কিছুই হবে না ভাই। ওদের যা সাহস দেখছি, তাতে খালি কেনেস্তারা আর ঢিল কিছুই হবে না। তুমি যদি তোমার কষ্টের ধান সত্যি সত্যি বাঁচাতে চাও, তাহলে জমিতে ফাঁদ পেতে রাখ। তাহলে বকের ঝাঁকটাকেই ধরতে পারবে।বন্ধুর কথামতো কৃষক পরেরদিন সকালেই তার জমিতে ফাঁদ পেতে রাখল। একটু বেলা হতেই বকের দল ঝাঁক বেঁধে উড়ে এসে কৃষকের জমিতে নামল। আর সঙ্গে সঙ্গে কৃষকের পাতা ফাঁদে সবকটি বক আটকা পরল। সেদিন বকেদের ঝাঁকে একটি সারস পাখিও ছিল। সংদোষে সেও সেদিন বকেদের সাথে বন্দী হল। বকের দল ফাঁদে আটকা পড়েছে দেখে কৃষক লাঠি হাতে তেড়ে এলো।

সারস পাখি দেখতে বকের মত হলেও আকরে বেশ বড়। তার লম্বা গলাটা ফাঁদের উপর উঁচু হয়ে ছিল। কৃষক দৌড়ে এসে তাকেই চেপে ধরল। সারস বুজতে পারল - বকদের সাথে এসে সে আজ মহা বিপদে পড়েছে। সে কাতর হয়ে বলল, কৃষক ভাই - আমি তোমার কোনো ক্ষতি করিনি, তুমি আমায় মেরো না। আমি যদি জানতাম বকেরা তোমার ফসলের ক্ষতি করতে আসছে, তাহলে কখনই ওদের সঙ্গে আসতাম না। এতদিনের জমে থাকা রাগে কৃষক তখন ফুঁসছিলো। আজ আমি কারো কথাই শুনব না। দুস্টু বকেরা এতদিন আমার অনেক ক্ষতি করেছে। তাদের সঙ্গে তুমি যখন ধরা পড়েছ,তখন সাজা তোমায় পেতেই হবে। আজ সবাইকে আমি গলা টিপে মারব। এই বলে কৃষক সবার আগে নির্দোষ সারসকেই গলা টিপে মেরে ফেলল।

নীতিকথা :- অসৎ সঙ্গে পড়লে সর্বনাশই হয়।


 

Comments

Popular posts from this blog

ছোটদের গল্প (এক কৃপণের ধন )

 এক মহা কৃপণ লোক ছিল। একদিন সে তার সমস্ত বিষয় সম্পত্তি বিক্রি করে, শহর থেকে বেশ বড় একটা সোনার দলা কিনে নিয়ে এল। তারপর সেটি ঘরে না রেখে, লুকিয়ে তার বাগানের এক কোণে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখল। এরপর থেকে রোজ সকাল হলেই, সেই কৃপণ তার বাগানে গিয়ে, চুপি চুপি গর্তের মাটি সরিয়ে সোনার দোলাটি দেখে, আবার মাটি চাপা দিয়ে আসত। সোনার দোলাটি ঘরে না রেখে মাটিতে পুঁতে কৃপণ মনে মনে খুব নিশ্চিন্ত হয়েছিল। এই ভাবে তার কেটে গেল অনেক দিন। হটাৎ একদিন সেই কৃপণের বাড়ির ধূত চাকর দেখে ফেলল সেই কান্ড। রোজ সকালে মনিবকে বাগানের মাটি খুঁড়তে দেখে তার ভীষণ কৌতূহল হল। গর্তের ভেতর কি আছে, তা দেখার জন্য সে সুযোগ খুঁজতে লাগল। একদিন কৃপণ কিছু কেনাকাটি করতে শহরে গেল। বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হল। সেই ফাঁকে চাকরটি বাগানে গিয়ে গর্তের মাটি সরিয়ে দেখতে পেল সোনার দলাটি। এতো বড়ো একটি সোনার দলা হাতে পেয়ে চাকরটির ভীষণ লোভ হল। মনিব ফেরার আগেই সে চুপি চুপি সোনার দলাটি নিয়ে পালিয়ে গেল। রোজকার মতো, পরেরদিন সকলে কৃপণ গর্তের কাছে গিয়ে দেখল, গর্ত খালি। সেখানে সোনার দলাটি নেই। কৃপণ বুক চাপড়ে কাঁদতে লাগল। তার কান্না শুনে প্রতিবেশিরা সবাই ছু

জনগণ মন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

 জনগণ মন অধিকনাক ও জন হে।  ভারত ভাগ্য বিধাতা।।  পাঞ্জাব ব সিন্ধ গুজরাত মারাঠা।  দাবির ও উৎচলো গঙ্গা।  তব শুভ  অসিস  মাঘে ।। গা হে তব জয় গাথা।  জনগণ মঙ্গল ও গায়ক ও  জয় হে ।। ভারত ভাগ্য বিধাতা জয় হে জয় হে জয় হে । জয় জয় জয় জয় জয় হে। ।