একদিন এক হরিণের ইচ্ছা হল, সে আঙুর লতার কচি পাতা খাবে। হরিণ সেই মতো তার নিজের জঙ্গল ছেড়ে, একটু দূরে, আঙুর বনের দিকে যেতে লাগল। কিছুদূর যেতেই এক ব্যাধ তাকে দেখে ফেললো। ব্যাধ তাকে শিকার করবার জন্য তেড়ে আসতেই, হরিণটা আঙুর বনের ভিতরে গিয়ে লুকিয়ে পড়লো। ব্যাধ তখন হরিনের পেছন পেছন তারা করে, আঙুর বনের মধ্যে ঢুকে হরিনকে খুঁজতে লাগলো।এভাবে বেশ কিছক্ষন কেটে গেল। হরিণটি ব্যাধকে আর না দেখতে পেয়ে নিশ্চিন্ত হলো। আঙুর গাছের কচি পাতা আর ডগা দেখে তার ভীষণ লোভ হলো। সে আর চুপ করে থাকতে পারলো না। ব্যাধের কথা ভুলে গিয়ে সে আঙুর লতার কচি কচি পাতা আর ডগা ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে লাগলো।
এদিকে ব্যাধ আঙুর বনের মধ্যে হরিনকে তন্ন তন্ন করে খুঁজতে লাগলো। হরিনকে কোথাও না পেয়ে শেষে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে লাগলো। ঘন একটা আঙুর ঝোপের পাশ দিয়ে আসার সময় হঠাৎ ব্যাধের কানে এলো একটা শব্দ। কাঁচর - মচর করে কেউ যেন কিছু চিবিয়ে খাচ্ছে। ব্যাধ বুজতে পারলো, হরিণটা নিশ্চই আশেপাশে কোথাও আছে। সে কিছুক্ষন চুপ করে দাঁড়িয়ে শব্দটা শুনলো।ব্যাধ তখন বুঝতে পারলো, হরিণটা তার সামনেই ঘন ঝোপটার মধ্যে লুকিয়ে লুকিয়ে আঙুর গাছের পাতা খাচ্ছে। সে তীর ধনুক নিয়ে তৈরী হল। খানিক পরে আঙুর গাছের লতাগুলো নড়ে উঠলো। ব্যাধ ও সেই মুহূর্তে নড়ে ওঠা ঝোপের দিকে নিশানা করে তীর ছুড়লো। নিশানা হলো অব্যথ। সঙ্গে সঙ্গে তীরটি গিয়ে বিধলো সোজা হরিনের বুকে। সে তৎক্ষনাৎ মাটিতে পড়ে যন্ত্রনায় ছটফট করতে লাগলো। কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলো - হায় হায়! আমি একি ভুল করলাম। বিপদের সময় যে আঙুর ঝোপ আমায় আশ্রয় দিয়েছিলো, আমি কিনা তারই পাতা ছিঁড়ে খাচ্ছিলাম। উপকারীর উপকার ভুলেছি বলেই এভাবে আমায় মরতে হলো।
নীতিকথা :- অতিবিশ্বাস ভাল নয়। সর্বদা সতর্ক থাকাই একান্ত কর্তব্য।
Comments
Post a Comment