Skip to main content

ব্যাধ ও হরিণ (ছোটোদের গল্প )

 


একদিন এক হরিণের ইচ্ছা হল, সে আঙুর লতার কচি পাতা খাবে। হরিণ সেই মতো তার নিজের জঙ্গল ছেড়ে, একটু দূরে, আঙুর বনের দিকে যেতে লাগল। কিছুদূর যেতেই এক ব্যাধ তাকে দেখে ফেললো। ব্যাধ তাকে শিকার করবার জন্য তেড়ে আসতেই, হরিণটা আঙুর বনের ভিতরে গিয়ে লুকিয়ে পড়লো। ব্যাধ তখন হরিনের পেছন পেছন তারা করে, আঙুর বনের মধ্যে ঢুকে হরিনকে খুঁজতে লাগলো।এভাবে বেশ কিছক্ষন কেটে গেল। হরিণটি ব্যাধকে আর না দেখতে পেয়ে নিশ্চিন্ত হলো। আঙুর গাছের কচি পাতা আর ডগা দেখে তার ভীষণ লোভ হলো। সে আর চুপ করে থাকতে পারলো না। ব্যাধের কথা ভুলে গিয়ে সে আঙুর লতার কচি কচি পাতা আর ডগা ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে লাগলো।

এদিকে ব্যাধ আঙুর বনের মধ্যে হরিনকে তন্ন তন্ন করে খুঁজতে লাগলো। হরিনকে কোথাও না পেয়ে শেষে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে লাগলো। ঘন একটা আঙুর ঝোপের পাশ দিয়ে আসার সময় হঠাৎ ব্যাধের কানে এলো একটা শব্দ। কাঁচর - মচর করে কেউ যেন কিছু চিবিয়ে খাচ্ছে। ব্যাধ বুজতে পারলো, হরিণটা নিশ্চই আশেপাশে কোথাও আছে। সে কিছুক্ষন চুপ করে দাঁড়িয়ে শব্দটা শুনলো।ব্যাধ তখন বুঝতে পারলো, হরিণটা তার সামনেই ঘন ঝোপটার মধ্যে লুকিয়ে লুকিয়ে আঙুর গাছের পাতা খাচ্ছে। সে তীর ধনুক নিয়ে তৈরী হল। খানিক পরে আঙুর গাছের লতাগুলো নড়ে উঠলো। ব্যাধ ও সেই মুহূর্তে নড়ে ওঠা ঝোপের দিকে নিশানা করে তীর ছুড়লো। নিশানা হলো অব্যথ। সঙ্গে সঙ্গে তীরটি গিয়ে বিধলো সোজা হরিনের বুকে। সে তৎক্ষনাৎ মাটিতে পড়ে যন্ত্রনায় ছটফট করতে লাগলো। কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলো - হায় হায়! আমি একি ভুল করলাম। বিপদের সময় যে আঙুর ঝোপ আমায় আশ্রয় দিয়েছিলো, আমি কিনা তারই পাতা ছিঁড়ে খাচ্ছিলাম। উপকারীর উপকার ভুলেছি বলেই এভাবে আমায় মরতে হলো।

নীতিকথা :- অতিবিশ্বাস ভাল নয়। সর্বদা সতর্ক থাকাই একান্ত কর্তব্য।

Comments

Popular posts from this blog

ছোটদের গল্প (এক কৃপণের ধন )

 এক মহা কৃপণ লোক ছিল। একদিন সে তার সমস্ত বিষয় সম্পত্তি বিক্রি করে, শহর থেকে বেশ বড় একটা সোনার দলা কিনে নিয়ে এল। তারপর সেটি ঘরে না রেখে, লুকিয়ে তার বাগানের এক কোণে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখল। এরপর থেকে রোজ সকাল হলেই, সেই কৃপণ তার বাগানে গিয়ে, চুপি চুপি গর্তের মাটি সরিয়ে সোনার দোলাটি দেখে, আবার মাটি চাপা দিয়ে আসত। সোনার দোলাটি ঘরে না রেখে মাটিতে পুঁতে কৃপণ মনে মনে খুব নিশ্চিন্ত হয়েছিল। এই ভাবে তার কেটে গেল অনেক দিন। হটাৎ একদিন সেই কৃপণের বাড়ির ধূত চাকর দেখে ফেলল সেই কান্ড। রোজ সকালে মনিবকে বাগানের মাটি খুঁড়তে দেখে তার ভীষণ কৌতূহল হল। গর্তের ভেতর কি আছে, তা দেখার জন্য সে সুযোগ খুঁজতে লাগল। একদিন কৃপণ কিছু কেনাকাটি করতে শহরে গেল। বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হল। সেই ফাঁকে চাকরটি বাগানে গিয়ে গর্তের মাটি সরিয়ে দেখতে পেল সোনার দলাটি। এতো বড়ো একটি সোনার দলা হাতে পেয়ে চাকরটির ভীষণ লোভ হল। মনিব ফেরার আগেই সে চুপি চুপি সোনার দলাটি নিয়ে পালিয়ে গেল। রোজকার মতো, পরেরদিন সকলে কৃপণ গর্তের কাছে গিয়ে দেখল, গর্ত খালি। সেখানে সোনার দলাটি নেই। কৃপণ বুক চাপড়ে কাঁদতে লাগল। তার কান্না শুনে প্রতিবেশিরা সবাই ছু

জনগণ মন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

 জনগণ মন অধিকনাক ও জন হে।  ভারত ভাগ্য বিধাতা।।  পাঞ্জাব ব সিন্ধ গুজরাত মারাঠা।  দাবির ও উৎচলো গঙ্গা।  তব শুভ  অসিস  মাঘে ।। গা হে তব জয় গাথা।  জনগণ মঙ্গল ও গায়ক ও  জয় হে ।। ভারত ভাগ্য বিধাতা জয় হে জয় হে জয় হে । জয় জয় জয় জয় জয় হে। ।