Skip to main content

( ছোটোদের গল্প ) বৃদ্ধ ও জমদেবতা

 

এক গ্রামে এক বৃদ্ধ বাস করত। সংসারে সে একবার একা। খুব কষ্ট করে তার দিন চলত। বনের কাঠ কেটে, বাজারে বিক্রি করে, সামান্য দু -চার পয়সা যা পেত, তাতে তার কোনোরকমে দিন চলত। এত দুঃখ কষ্ট বৃদ্ধের আর সহ্য হতো না।সে মাঝে মাঝেই নিজের ভাগ্যকে গালি দিতো। একদিন গ্রীষ্মের কাঠ ফাটা রোদে বৃদ্ধ কাঠের বোঝা নিয়ে বন থেকে ফিরছিলো। রোদে পুড়ে ঘামে ভিজে তার শরীর উত্তপ্ত হয়ে উঠল যে, তার পায়ে ফোস্কা পড়ে গেল।
 বেচারা বৃদ্ধ কি আর করে। শেষে ক্লান্ত হয়ে, মাথার বোঝাটা নামিয়ে রেখে, পথের ধারে গাছের তলায় বসে বিশ্রাম নিতে লাগল। তার মনে ভীষণ রাগ আর দুঃখ হল।বাঁচে থাকার জন্য, এই বুড়ো বয়সেও এত কষ্ট করতে হচ্ছে। সে বসে বসে নিজের দুর্ভাগ্যকে গালি দিতে লাগল। শেষে বৃদ্ধ আক্ষেপ করে বলতে লাগল - সংসারে রোজ এত লোকের মরণ হচ্ছে ; তবু তার মরণ হচ্ছে না কেন? ব্যাটা যম! তুমি কি অন্ধ হয়ে গেছো। এত মানুষেকে রোজ চোখে দেখো, তবু আমায় কিছুতেই চোখে দেখো না। এত কষ্ট আমি আর সইতে পারছি না। হে যম! এবার আমার ডাক শুনে দয়া করে আমায় নিয়ে যাও।
বৃবৃদ্ধার মুখের কথা শেষে হতে না হতেই, ভীষণ মূর্তি ধারণ করে যমরাজ তার সামনে হাজির হলেন। যমকে দেখে বৃদ্ধ ভয় পেয়ের বলল- একি! কে আপনি? এখানে এসেছেন কেন? বৃদ্ধার কথা শুনে যমরাজ বললেন - আমি মৃত্যুর দেবতা যম! তোমার ডাক শুনেই আমি এসেছি। এখন বলো, কেন আমার ডেকেছ? যমের কথা শুনে বৃদ্ধ চমকে উঠলেন। সত্যিই তো। সে এতক্ষন যমকেই ডাকছিলো। এখন কি করবে সে। যম তাকে নিতে এসেছে যে। বৃদ্ধ একটু ভেবে বলল, পভু! আপনাকে আর কি বলবো। অধমের ডাক শুনে দয়া করে যখন এসেই পড়েছেন, তখন একটু কষ্ট করে বোঝাটা আমার মাথায় তুলে দিন। আমায় এবার বাজারে যেতে হবে। বৃদ্ধার কথা শুনে যম একটু হাসলেন। তার পর অদৃশ হয়ে গেলেন।


নীতিকথা :- দুঃখ কষ্টে মানুষ মৃত্যুকে যতই কামনা করুক, আসলে সে মরতে চায় না।

Comments

Popular posts from this blog

ছোটদের গল্প (এক কৃপণের ধন )

 এক মহা কৃপণ লোক ছিল। একদিন সে তার সমস্ত বিষয় সম্পত্তি বিক্রি করে, শহর থেকে বেশ বড় একটা সোনার দলা কিনে নিয়ে এল। তারপর সেটি ঘরে না রেখে, লুকিয়ে তার বাগানের এক কোণে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখল। এরপর থেকে রোজ সকাল হলেই, সেই কৃপণ তার বাগানে গিয়ে, চুপি চুপি গর্তের মাটি সরিয়ে সোনার দোলাটি দেখে, আবার মাটি চাপা দিয়ে আসত। সোনার দোলাটি ঘরে না রেখে মাটিতে পুঁতে কৃপণ মনে মনে খুব নিশ্চিন্ত হয়েছিল। এই ভাবে তার কেটে গেল অনেক দিন। হটাৎ একদিন সেই কৃপণের বাড়ির ধূত চাকর দেখে ফেলল সেই কান্ড। রোজ সকালে মনিবকে বাগানের মাটি খুঁড়তে দেখে তার ভীষণ কৌতূহল হল। গর্তের ভেতর কি আছে, তা দেখার জন্য সে সুযোগ খুঁজতে লাগল। একদিন কৃপণ কিছু কেনাকাটি করতে শহরে গেল। বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হল। সেই ফাঁকে চাকরটি বাগানে গিয়ে গর্তের মাটি সরিয়ে দেখতে পেল সোনার দলাটি। এতো বড়ো একটি সোনার দলা হাতে পেয়ে চাকরটির ভীষণ লোভ হল। মনিব ফেরার আগেই সে চুপি চুপি সোনার দলাটি নিয়ে পালিয়ে গেল। রোজকার মতো, পরেরদিন সকলে কৃপণ গর্তের কাছে গিয়ে দেখল, গর্ত খালি। সেখানে সোনার দলাটি নেই। কৃপণ বুক চাপড়ে কাঁদতে লাগল। তার কান্না শুনে প্রতিবেশিরা সবাই ছু