Skip to main content

ছাগল ও চতুর শেয়াল ( ছোটোদের গল্প )

 


একদিন এক শেয়াল তেষ্টায় কাতর হয়ে, এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে, একটু জলের সন্ধান করছিলো। কিন্তু প্রখর রোদে সব কিছু শুকিয়ে যাওয়ায়, সে কোথাও একটু জলের খোঁজ পেল না। শেষে এক পড়া বাড়ির কাছে এসে সে একটা ছোট্ট পাতকুঁয়ো দেখতে পেল। অনেকদিন পড়ে থেকে সেটি মজে গিয়েছে। তাতে জল আছে, তবে খুব সামান্য। শেয়ালের এত জল তেষ্টা পেয়েছিলো যে, সে আর ভালমন্দ বিচার না করেই লাফ দিয়ে নেমে পরল কুঁয়োর মধ্যে। তারপর সে প্রাণ ভরে পান করল কুঁয়োর ঠান্ডা জল।

এরপর শেয়াল পরল বিপদে। জল পান করে সে কিছুতেই কুঁয়োর উপর উঠতে পারল না। বারবার লাফলাফি করে অনেক চেষ্টা করল, কিন্ত তবুও সে উপরে উঠে আসতে পারল না। অবশেষে গলা - জলে দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগল, কি করে কুঁয়োর মধ্যে থেকে বাইরে আসা যায়। এমন সময় একটি তৃস্নাত ছাগল জলের খোঁজে, সেই পাতকুঁয়োর সামনে এসে উপস্থিত হল।সে কুঁয়োর ভেতর উঁকি মারতেই দেখলো, শেয়াল সেখানে দাঁড়িয়ে। ছাগল মনে মনে ভাবল - সে বুঝি প্রাণ ভরে জল খেয়ে, ঠান্ডা জলে স্নান করছে। সে শেয়ালকে ডেকে বলল, ও ভাই শেয়াল! তুমি তো দেখছি বেশ জল খেয়ে মনের আনন্দে স্নান করছো। আর আমি একটু জলের জন্য, সেই কখন থেকে ঘুরে মরছি। তা ভাই শেয়াল, কুঁয়োর জলটা কেমন? ছাগলকে দেখতে পেয়ে শেয়ালের বুদ্ধি খুলে গেল। সে বলল, আর বলো কেন ভাই এমন সুস্বাদু আর ঠান্ডা জল আমি জীবনে কখনো খাইনি। সেই জন্য এখান থেকে তো আর উঠতেই ইচ্ছে করছে না। তুমিও একবার নেমে পরখ করে দেখতে পারো।

শেয়ালের কথা শুনে ছাগল আর দেরি করল না। সে লাফিয়ে পরল কুঁয়োর ভেতর। শেয়ালও সঙ্গে সঙ্গে তার পিঠে ভর করে, গর্তের দেওয়ালে পা দিয়ে, এক লাফে উঠে এলো কুঁয়োর বাইরে। শেয়ালকে উঠে যেতে দেখে ছাগল বলল - একি ভাই, তুমি উঠে গেলে যে? শেয়াল বলল, তোমায় দেখে আমার জল খাবার সাদ মিটে গেছে ভাই। এবার তুমিও আমার মত প্রাণ ভরে জল খাও। আর মন ভরে স্নান করো। এখন আমি চললুম।

নীতিকথা :- দুস্টু লোকের মিষ্টি কথায় ভুললে বোকাদেরও কষ্ট পেতে হয়।

Comments

Popular posts from this blog

ছোটদের গল্প (এক কৃপণের ধন )

 এক মহা কৃপণ লোক ছিল। একদিন সে তার সমস্ত বিষয় সম্পত্তি বিক্রি করে, শহর থেকে বেশ বড় একটা সোনার দলা কিনে নিয়ে এল। তারপর সেটি ঘরে না রেখে, লুকিয়ে তার বাগানের এক কোণে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখল। এরপর থেকে রোজ সকাল হলেই, সেই কৃপণ তার বাগানে গিয়ে, চুপি চুপি গর্তের মাটি সরিয়ে সোনার দোলাটি দেখে, আবার মাটি চাপা দিয়ে আসত। সোনার দোলাটি ঘরে না রেখে মাটিতে পুঁতে কৃপণ মনে মনে খুব নিশ্চিন্ত হয়েছিল। এই ভাবে তার কেটে গেল অনেক দিন। হটাৎ একদিন সেই কৃপণের বাড়ির ধূত চাকর দেখে ফেলল সেই কান্ড। রোজ সকালে মনিবকে বাগানের মাটি খুঁড়তে দেখে তার ভীষণ কৌতূহল হল। গর্তের ভেতর কি আছে, তা দেখার জন্য সে সুযোগ খুঁজতে লাগল। একদিন কৃপণ কিছু কেনাকাটি করতে শহরে গেল। বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হল। সেই ফাঁকে চাকরটি বাগানে গিয়ে গর্তের মাটি সরিয়ে দেখতে পেল সোনার দলাটি। এতো বড়ো একটি সোনার দলা হাতে পেয়ে চাকরটির ভীষণ লোভ হল। মনিব ফেরার আগেই সে চুপি চুপি সোনার দলাটি নিয়ে পালিয়ে গেল। রোজকার মতো, পরেরদিন সকলে কৃপণ গর্তের কাছে গিয়ে দেখল, গর্ত খালি। সেখানে সোনার দলাটি নেই। কৃপণ বুক চাপড়ে কাঁদতে লাগল। তার কান্না শুনে প্রতিবেশিরা সবাই ছু

জনগণ মন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

 জনগণ মন অধিকনাক ও জন হে।  ভারত ভাগ্য বিধাতা।।  পাঞ্জাব ব সিন্ধ গুজরাত মারাঠা।  দাবির ও উৎচলো গঙ্গা।  তব শুভ  অসিস  মাঘে ।। গা হে তব জয় গাথা।  জনগণ মঙ্গল ও গায়ক ও  জয় হে ।। ভারত ভাগ্য বিধাতা জয় হে জয় হে জয় হে । জয় জয় জয় জয় জয় হে। ।